সেই শৈশবের স্মৃতির প্রথম থেকেই সময় হলে বেলার পরিবর্তন দেখতে পেতাম। ভর দুপুরে অপেক্ষা করতাম কখন মুয়াজ্জিনে কন্ঠে আসরের আযানের শব্দ শুনতেপাবো -- মা তাহলে বাইরে যেতে অনুমুতি দেবেন। মাগরিবের আযান শুনলেই সচকিত হয়ে ফিরে আসতাম বাসায়, আযান শেষ হবার আগেই বাসায় পা না দিলে মা তার স্বভাবসুলভ হাসিটা উপহার দিতেননা। সেই হাসির টানেই আযান শোনামাত্র তাড়াহুড়া করা হতো...
সময় বদলে বড় হলাম, কৈশোর এলো। তখনো অপেক্ষা করতাম। কখনো বিকেলে খেলার সাথীদের সমস্বরে জোরে আনন্দের উল্লাসধ্বনি। কখনো আবার রাতের অপেক্ষায় থাকতাম টেলিভিশনে রোবোকপ দেখবোবলে, থান্দার ইন প্যারাডাইস বা হারকিউলিস দেখবো বলে। এই অপেক্ষাগুলো ছিলো অদ্ভূত! পরীক্ষা শেষ কবে হবে এই ভেবে ক্রমাগত অপেক্ষায় থাকতাম পড়ার টেবিলে -- কয়েকটা তিন গোয়েন্দার বই কিনে অ্যাডভেঞ্চারে দৌড়াবো বলে।
ফযরের পর বারান্দায় বসে ভোর হওয়া দেখতাম। শহুরে জীবনের দালানকোঠার ফাঁক দিয়ে ভোরের সূর্যের আত্মপ্রকাশটা প্রায় প্রতিদিনই আমার চোখের সামনে হতো। আমি মৃদুমন্দ হাওয়ার মাঝেখুব মন দিয়ে এই সূর্যোদয় দেখতাম। কখনো হাতে তিন গোয়েন্দার গোবেল বীচে যাওয়ার গল্প আমার সাথী, কখনো জুলভার্নের মাস্টার অফ দি ওয়ার্ল্ডের জল-স্থল-আকাশে চড়া যানে করে ঘুরতে থাকা, কখনো আহমদমুসার সাথে ঘুরে বেড়াতাম মিন্দানাও, আটলান্টিকের ওপারে, ককেশাসের প্রান্তরে। অদ্ভূত একটা কল্পনা আর স্বপ্নময় সময়গুলো!
আজো তেমনি করে রাত নামে, সন্ধ্যা হয়। সূর্যোদয় দেখিনা প্রায় আধযুগ হলো। অমন করে অপেক্ষা করিনা কিছুর জন্যই আজ অনেকদিন হলো। হৃদয়ের ভালোবাসা-ভালোলাগার অনুভূতিটাকে ভয় করি বলে একদম সিন্দুকে ভরে রেখে দিয়েছি আজ অনেক বছর। তাই হয়তো আর এই রাতের আকাশটাকে দেখা হয়না। নাগরিক জীবনে ঘরের সিলিংএর ঝুল, ফেটে যাওয়া পলেস্তরা খসে যাওয়া ছাদের দিকে তাকিয়ে ক্রমাগত পেরিয়ে যায় দিনগুলো।
হয়ত এভাবেই প্রৌঢ়ত্ব স্পর্শ করবে, বার্ধক্য গ্রাস করবে। জীবনের নিত্যনতুন ঔদাসীন্য আর জটিলতায় ক্লান্ত হয়ে বিদায়ের অপেক্ষায় কাটবে দিবস-রজনী...
ছেলেবেলাকে তাই হয়ত 'মিস' করে যাবো মৃত্যুবধি!
অরিজিনাল লিংক
http://www.sonarbangladesh.com/blog/dreamer/35113
সময় বদলে বড় হলাম, কৈশোর এলো। তখনো অপেক্ষা করতাম। কখনো বিকেলে খেলার সাথীদের সমস্বরে জোরে আনন্দের উল্লাসধ্বনি। কখনো আবার রাতের অপেক্ষায় থাকতাম টেলিভিশনে রোবোকপ দেখবোবলে, থান্দার ইন প্যারাডাইস বা হারকিউলিস দেখবো বলে। এই অপেক্ষাগুলো ছিলো অদ্ভূত! পরীক্ষা শেষ কবে হবে এই ভেবে ক্রমাগত অপেক্ষায় থাকতাম পড়ার টেবিলে -- কয়েকটা তিন গোয়েন্দার বই কিনে অ্যাডভেঞ্চারে দৌড়াবো বলে।
ফযরের পর বারান্দায় বসে ভোর হওয়া দেখতাম। শহুরে জীবনের দালানকোঠার ফাঁক দিয়ে ভোরের সূর্যের আত্মপ্রকাশটা প্রায় প্রতিদিনই আমার চোখের সামনে হতো। আমি মৃদুমন্দ হাওয়ার মাঝেখুব মন দিয়ে এই সূর্যোদয় দেখতাম। কখনো হাতে তিন গোয়েন্দার গোবেল বীচে যাওয়ার গল্প আমার সাথী, কখনো জুলভার্নের মাস্টার অফ দি ওয়ার্ল্ডের জল-স্থল-আকাশে চড়া যানে করে ঘুরতে থাকা, কখনো আহমদমুসার সাথে ঘুরে বেড়াতাম মিন্দানাও, আটলান্টিকের ওপারে, ককেশাসের প্রান্তরে। অদ্ভূত একটা কল্পনা আর স্বপ্নময় সময়গুলো!
আজো তেমনি করে রাত নামে, সন্ধ্যা হয়। সূর্যোদয় দেখিনা প্রায় আধযুগ হলো। অমন করে অপেক্ষা করিনা কিছুর জন্যই আজ অনেকদিন হলো। হৃদয়ের ভালোবাসা-ভালোলাগার অনুভূতিটাকে ভয় করি বলে একদম সিন্দুকে ভরে রেখে দিয়েছি আজ অনেক বছর। তাই হয়তো আর এই রাতের আকাশটাকে দেখা হয়না। নাগরিক জীবনে ঘরের সিলিংএর ঝুল, ফেটে যাওয়া পলেস্তরা খসে যাওয়া ছাদের দিকে তাকিয়ে ক্রমাগত পেরিয়ে যায় দিনগুলো।
হয়ত এভাবেই প্রৌঢ়ত্ব স্পর্শ করবে, বার্ধক্য গ্রাস করবে। জীবনের নিত্যনতুন ঔদাসীন্য আর জটিলতায় ক্লান্ত হয়ে বিদায়ের অপেক্ষায় কাটবে দিবস-রজনী...
ছেলেবেলাকে তাই হয়ত 'মিস' করে যাবো মৃত্যুবধি!
অরিজিনাল লিংক
http://www.sonarbangladesh.com/blog/dreamer/35113